~Chapter- 1~
হ্যাঁ, এরকম ভাবেই শুরু করলাম লেখাটা--- ধরনখানা জানি অনেকটা আচমকা-ই, অদ্ভুত রকম আর ধোঁয়াশা ভরা। তা হোক, ক্ষতি কি ? মানে তাতে "অসুবিধা নেই"। যদিও এ ঘটনা একদম শুরুর কথা নয়; সেটা শুরুর থেকে শুরু করার তেমন ইচ্ছেও নেই কারণ সবার জীবনের সবটা শুরু থেকে শুরু হয়না--- এক্ষেত্রে আমার 'জীবনি'- টাও সেরকমই ! যাই হোক আর হেঁয়ালি করব না, আমার কাহিনীর--- সঠিক ভাবে বলতে গেলে এ 'আত্মকথা'-র ছোট্ট করে একটা গোড়াপত্তন করে দিই, না হলে এরকমভাবে এলোমেলো লেখাগুলো পড়তে পড়তে দু-মিনিটের মধ্যে, যে কেউই, বসার ঘরে রদ্দি কাগজের স্থানে লেখাটাকে নিক্ষেপ করে দিতে দুই সেকেন্ডের বেশি সময় লাগাবে না ! তার আগে বলে রাখি এখানে বিশেষ কিছু জায়গা বা ব্যক্তির আসল নাম উহ্য রেখে 'সর্বনাম' বা কিছু 'ছদ্মনাম' ব্যবহার করেই এখন বর্ণনা করছি, পরে উপযুক্ত সময়-সুযোগ বুঝে সেসব নাম নেওয়া যাবেক্ষন।
'আমি' হলাম গিয়ে একটা 'রেল-স্টেশন'। আর এখানে এই 'আমি' ব্যাপারটা বেশ কিছুটা 'dynamic'--- যাকে বলে নিরন্তর-গতিশীল রকমের; সেটা জানি জ্ঞানচক্ষু থেকেই তবে এর আগে আমি কী ছিলাম বা কোথায় ছিলাম ? পরবর্তীতে কোথায় যাব কী হবো ? জানি না, দৈব-দোষে কি দৈব-গুনে তাও জানা নেই, হঠাৎই একরকম ভাবে আমার প্রাণ-প্রতিষ্ঠা এই স্টেশনে--- তা সে জগৎ চরাচরের দৃষ্টিগোচর হয়নি; আর তারা আমার প্রাণের অস্তিত্ব টের পায় না বলে কাক-পক্ষি থেকে শুরু করে মানুষজনের কাছে আমি নেহাত গঞ্জ বা শহরতলির একলাগোছের একটা স্টেশন--- আর পাঁচটা স্টেশনের মতই, জড় পদার্থের সমষ্টি। কিন্তু আসলে ঠিক তা নয়, ঐ যে বললাম 'নিরন্তর-গতিশীল' আমি। সেটা হল আমার একটা বিশেষত্ব আছে--- আমার যে কেবলমাত্র এই স্টেশনের ইট-পাথর-বালিতে, ইস্পাতের রেল-লাইনে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়েছে তা-ই নয়, আমি রীতিমত স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সঞ্চারণশীল; সোজা ভাষায় 'আমি'-টার কিছু অংশ প্রাণ যখন তখন এই স্টেশনের জড়-সত্তাকে ছেড়ে অন্য কোনো বাহ্যিক বস্তুতে অনায়াসে, সন্তর্পণে ঘোরাফেরা করতে পারে ! সে কারণে আমি কখনো সখনো এই স্টেশনে থেকেই বাইরের কোনো বা কারো কিছুর ঘটনা চাক্ষুষ এবং পরিস্থিতির রসাস্বাদন করতে পারি। ব্যাপারটা ভূতুড়ে শোনাচ্ছে ? ঠিক ভূতুড়ে না, অদ্ভুতুরে বলা যেতে পারে ! ভূতের ব্যাপার স্যাপারে তো ঐ 'possession' বা 'conjure' ধরনের বা আরও সহজ করে বললে 'অন্যের ঘাড়ে চেপে তাকে বশীভূত করে কিছুক্ষণ মজা করা, তারপর সুযোগ সুবিধা বুঝে ঘাড় মটকে দেওয়া' সেসব হয়ে থাকে কিন্তু আমার ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম আছে। প্রথমতঃ, আমি জীবিত কোনো কিছুর মধ্যে সঞ্চারিত হতে পারিনা তাই তাদের কোনো ক্ষতি বা উপকার করা আমার ক্ষমতাতীত। দ্বিতীয়তঃ, আমার এই বিশেষ সঞ্চার-শক্তি অসীম দূরে ক্রিয়াশীল নয়, শুধুমাত্র যারা বা যে জিনিসগুলো এই স্টেশনের সংস্পর্শে আসে সে যে ভাবেই হোক--- ট্রেনের যাত্রীটা কি সেরকম হলে আস্ত ট্রেনটাই, স্টেশনের কর্মচারী কিম্বা ঘুরতে আসা বা এ পথ দিয়ে পেরিয়ে যাওয়া কেউ হোক তাদের কাছের কোনো জড়-বস্তু যেমন জামাকাপড়, ছাতা-জুতো, বাক্স-প্যাটরা, যানবাহন ইত্যাদির কোনো একটার মধ্যে উঠে বসি। যখন খুশি এর ওর সাথে ঘুরে চলে আসি তাদের অজান্তেই, তাতে আমার চির-একাকিত্ত আর এক ঘেঁয়েমি কিছুটা হলেও কাটে ! ব্যাপারটা অলৌকিক হলেও ক্ষতিকর কিছু না বরং বেশ মজাদার--- তা সে বিচার্য বিষয়ই না কারণ কেউই কিস্যু টের পায় না।
« Previous Next »
Esc to Story Section
Esc to Index Page
Bhalo lekha
ReplyDeleteধন্যবাদ!
ReplyDelete